সফলভাবে চাঁদের মাটি স্পর্শ করল জাপানের চন্দ্রযান স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন (স্লিম)। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) দেশটির স্থানীয় সময় ১২টা ২০ মিনিটে চাঁদের মাটি স্পর্শ করে জাপানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে বানানো মনুষ্যহীন চন্দ্রযান ল্যান্ডার স্লিম।

জানা গেছে, চাঁদের শিওলি কার্টার নামের একটি এলাকায় সেটি অবতরণ করে। এর ফলে চাঁদে সফলভাবে অবতরণ করা পঞ্চম দেশ হিসেবে ইতিহাস গড়ল এশিয়ার দেশ জাপান। এর আগে কেবলমাত্র চারটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন ও ভারত এই কৃতিত্ব অর্জন করতে পেরেছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি মানবহীন চন্দ্রযান ল্যান্ডার বা ‘মুন স্নাইপার’ সফলভাবে লক্ষ্যের ১০০ মিটারের মধ্যে অবতরণ করেছে। চাঁদের বুকের একটি গর্ত সংলগ্ন এলাকাকে যানটিকে নামানোর আদর্শ জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছেন দেশটির বিজ্ঞানীরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চন্দ্রপৃষ্ঠে মহাকাশযান নামানোর জন্য এমন এলাকা বেছে নেয়ার কারণ চাঁদের বুকের ঢাল। ঐ এলাকার জমি ১৫ ডিগ্রির কম ঢালু, যা চন্দ্রযান ল্যান্ডার নামানোর জন্য আদর্শ বলে মনে করা হয়।

দেশটির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চাঁদে পানি ও মানুষের বাসস্থানের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবে চন্দ্রযানটি। চাঁদে পানির রহস্য খুব সহজেই উদঘাটন করতে পারবে যানটি।

তবে মহাকাশযানটির সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দেওয়ায় এরইমধ্যে বিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে। বর্তমানে ব্যাটারির ওপর নির্ভর করছে যানটি, ফলে মিশনটি হুমকির মুখে পড়তে পারে। যদিও জেএএক্সএ জানিয়েছে, ব্যাটারির শক্তি শেষ হওয়ার আগেই সোলার সিস্টেম সচলের চেষ্টা চালছে।

জাপানের চন্দ্রযানটি থেকে চাঁদের বুকে যে রোভার নামবে সেটি এক্স-রে ছবি তুলবে। ‘স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেশন মুন’ নামের রোভারটি কৃষ্ণগহ্বর, নিউট্রন স্টার এবং সুপারনোভারের উচ্চ মানের এক্স-রে তুলে জাপানের মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রে পাঠাবে। ছবি থেকে সেগুলোর গঠন সম্পর্কে দেশটির বিজ্ঞানীরা স্পষ্ট ধারণা পাবেন।

প্রসঙ্গত, জাপানের তানেগাশিমা দ্বীপের উৎক্ষেপণকেন্দ্র থেকে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর এইচ-আইআইএ রকেটে চড়িয়ে চন্দ্রযানটি উৎক্ষেপণ করা হয়। গত ২৫ ডিসেম্বর চাঁদের কক্ষপথে যানটি প্রবেশ করে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন ও ভারত জাপানের আগে সফলভাবে চাঁদে অবতরণ করেছে।